ক্রিকেট বিশ্ব এখন ছুটছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক ক্রিকেটে টুর্নামেন্টের দিকে। এমনকি ক্রিকেটাররাও হাটছে সেই পথে। শুধু এই ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের জন্যই ধ্বংসের পথে চলে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল। যদিও এখনো নিজেদের চেনা ছন্দে পৌঁছাতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে একাধিক তারকা ক্রিকেটার থাকতেও জাতীয় দলে খেলতে চায় না কেউই। এখন সেই পথে হাঁটছে বেশ কয়েকটি দেশের ক্রিকেটাররা। সেই সাথে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে নতুন কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট।
মাঠে গড়ানোর আগেই অর্থের ঝনঝনানিতে বিশ্বে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে আরব আমিরাতের নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি টি২০ লিগ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট লিগ। দুই ক্রিকেট লিগে রয়েছে ভারতের আইপিএলের ফ্রাঞ্চাইজিরা। তাই নিঃসন্দেহে আইপিএলের পরে সবচেয়ে জমজমাট টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে এই দুই ক্রিকেট লিগ।
তবে তার প্রভাব পড়বে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে। তার কারণ একই সময়ে আয়োজিত হবে বিপিএল এবং ওই দুই ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ। কাছাকাছি সময়ে এ টুর্নামেন্ট শুরু হলে বিদেশি ক্রিকেটারের খরা পড়তে পারে বিপিএলে। এ আশঙ্কাই সত্যি হতে যাচ্ছে।
আগামী জানুয়ারিতে শুরু হতে যাচ্ছে তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ। এরই মধ্যে আরব আমিরাত টি২০ লিগ ও দক্ষিণ আফ্রিকা টি২০ লিগের মধ্যে বিদেশি নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে গেছে। ওই দুই টুর্নামেন্টের মতো জানুয়ারিতে শুরু হতে যাওয়া বিপিএল অবশ্য এখনও মাঠে নামেনি। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে তারা ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকানা বিক্রি করবে।
ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করলেও বিষয়টি নিয়ে খুব একটা আলোচনা নেই। যার মানে, ফ্র্যাঞ্চাইজি কিনতে খুব একটা আগ্রহ এখনও দেখা যাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত হয়তো সাত ফ্র্যাঞ্চাইজি বিক্রি হবে, কিন্তু দলগুলোর জন্য মানসম্মত বিদেশি যে পাওয়া যাবে না, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এরই মধ্যে গত বিপিএলে খেলা ৩১ বিদেশির মধ্যে ১৮ জনই আরব আমিরাতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। গত বিপিএল খেলাদের মধ্যে এরই মধ্যে আমিরাত লিগে চুক্তি করে ফেলেছেন ডোয়াইন ব্রাভো, মুজিব-উর রহমান, মঈন আলী, সুনীল নারিন, ইসরু উদানা, আন্দ্রে রাসেল, কায়েস আহমেদ, ফয়জুল্লাহ ফারুকি, হজরতউল্লাহ জাজাই, রহমানুল্লাহ গুরবাজ, নাবিন উল হক, সিকান্দার রাজা, রবি বোপারা প্রমুখ ক্রিকেটাররা।
এ ছাড়া টি২০ ফরম্যাটের তারকা কিয়েরন পোলার্ড, নিকোলাস পুরান, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, শিমরন হেটমায়ার, ক্রিস জর্ডান, ডেভিড মালান, এভিন লুইস, রোভম্যান পাওয়েলসহ বিশ্বের নামি ৫৫ ক্রিকেটার আমিরাত লিগে চুক্তি করে ফেলেছেন।
শোনা যাচ্ছে, অর্থের ঝনঝনানিতে আইপিএলকে টক্কর দিতে পারে আমিরাত লিগ। এখানে মালিক হিসেবে আছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মালিক রিলায়েন্স গ্রুপ, কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিকরা। এ ছাড়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মালিক গ্লেজাররাও দল কিনেছেন এখানে।
দক্ষিণ আফ্রিকাও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের জন্য চুক্তি করা ৩০ জন মার্কি ক্রিকেটারের এক তালিকা প্রকাশ করেছে। সেখানে ফাফ ডু প্লেসিস, রাইলো রুশো, কুইন্টন ডি কক, ডেভিড মিলারদের সঙ্গে আছেন জস বাটলার, লিয়াম লিভিংস্টোন, ইয়ন মরগান, জেসন রয়সহ ১১ জন ইংলিশ। মজার বিষয় হলো, আমিরাত লিগের তালিকায় থাকা মঈন আলী ও নিরোশান ডিকওয়েলার নামও আছে দক্ষিণ
আফ্রিকা বোর্ডের তালিকায়। প্রোটিয়ারা শুধু তালিকাই প্রকাশ করেনি, পারিশ্রমিক নিয়েও ধারণা দিয়েছে। বাটলার, লিভিংস্টোনদের মতো তারকারা পাবেন ৫ লাখ ইউএস ডলার। মঈন আলী পাবেন ৪ লাখ ডলার।
খেলোয়াড়ের আরও সংকটের কারণ হলো আগামী বছর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড কোনো খেলোয়াড় ছাড়বে না। আমিরাত লিগে খেলার জন্য দু’জন পাকিস্তানি ক্রিকেটার পিসিবিতে আবেদন করে অনুমতি পাননি। তাদেরকে ঘরোয়া লিগে মন দিতে বলা হয়ছে।