বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ভবিষ্যৎ যে তিন নতুন তারকা ক্রিকেটার পেল বাংলাদেশ

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের কিছু তরুণ ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স মুগ্ধ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে। গতকাল ফাইনালের সময় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিসিবির সভাপতি জানিয়েছিলেন, ‘এ টুর্নামেন্ট থেকে আমরা বেশ কিছু প্লেয়ার পেয়েছি, যারা আমাদের পাইপলাইন শক্তিশালী করেছে।”

এমনকি তিনি কয়েক জনের নাম উল্লেখ করেছিলেন গতকাল। ভবিষ্যতে হয়তো তাদেরকে খুব দ্রুতই জাতীয় দলে দেখা যেতে পারে। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে নজরকাড়া কয়েক জন ক্রিকেটারের তালিকা।

পারভেজ হোসেন ইমন (ফরচুন বরিশাল) : তালিকায় প্রথমেই রয়েছেন পারভেজ হোসেন ইমন। যুব বিশ্বকাপ বিজয়ী দলের এই ক্রিকেটার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে একপ্রকার চমকে দিয়েছেন। টুর্ণামেন্টে মাত্র ৪২ বলে সেঞ্চুরি করে রেকর্ড করেছিলেন তিনি।

মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর বিপক্ষে ম্যাচে ২২০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৪২ বলে সেঞ্চুরি করেছেন পারভেজ ইমন। যা কি না দেশের ইতিহাসে যেকোনো ফরম্যাটে দ্রুততম ও সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরির রেকর্ড।

টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ৪২ বলে ৫১ রানের ইনিংস দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। সবমিলিয়ে খেলেছেন ৯টি ম্যাচ, রান করেছেন ২৩৩, স্ট্রাইকরেট ছিল ১৩০+। রাজশাহীর বিপক্ষে খেলা ৪২ বলে ১০০ রানের ইনিংসের জন্য টুর্নামেন্টের বিশেষ পারফরম্যান্সের পুরস্কারও পেয়েছেন এ ১৯ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।





শরিফুল ইসলাম (গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম) : বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছেন শরিফুল ইসলাম। গতবছরের যুব বিশ্বকাপের পর থেকেই তাকে নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছিল। তরুণ সম্ভাবনাময় এই ফাস্ট বলার সুযোগ পেয়ে কাজে লাগিয়েছেন। ছয় ফুটের বেশি উচ্চতায় ফাস্ট বোলিংয়ের আগ্রাসনটা সহজাত শরিফুলের। যা এবার হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে প্রতিপক্ষ দলগুলো।

টুর্নামেন্টে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের অপ্রতিরোধ্য যাত্রার অন্যতম কান্ডারি ছিলেন শরিফুল। আরেক বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে মিলে প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইনআপকে বেঁধে রাখার কাজটা সফলতার সঙ্গেই করেছেন তিনি। উচ্চতার কারণে পাওয়া বাড়তি বাউন্স এবং একইসঙ্গে স্লোয়ারের মিশেল শরিফুলের বোলিংকে করে তোলে আনপ্লেয়েবল।

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট দারুন কাটিয়েছেন তিনি। ম্যাচে ৩৮ ওভার বোলিং করেছেন শরিফুল, ৮.০০ ইকোনমিক রেটে আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৬টি উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো বোলিংয়ে ২৭ রানে ৩ উইকেট নেয়ায় তিনিও পেয়েছেন বিশেষ পারফরম্যান্সের পুরস্কার।

আনিসুল ইসলাম ইমন (মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী) : আনিসুল ইসলাম ইমনের নামটি জাতীয় পর্যায়ে একদমই নতুন। ২০১৮-১৯ মৌসুমের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন আনিসুল ইসলাম ইমন। ওই টুর্ণামেন্টে নজরকাড়া ব্যাটিং করেন তিনি। পুরো টুর্ণামেন্টে করেন ৪২৪ রান।

গত মার্চে স্থগিত হয়ে যাওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও প্রথম ম্যাচ খেলেছেন আনিসুল ইসলাম ইমন। প্রথম ম্যাচেই হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। দুর্দান্ত খেলে জায়গা করে নেন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে। খেলেছিলেন মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর হয়ে।

অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ইনিংসের সূচনা করেছেন পুরো ৮টি ম্যাচেই। রান করেছেন দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯৯, হাঁকিয়েছেন দুইটি ফিফটি। এছাড়া বল হাতেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেকথ্রুসহ নিয়েছেন মোট ৪টি উইকেট।

ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্ত সেঞ্চুরি করেছিলেন ওই ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন আনিসুল ইসলাম ইমন। ৩৯ বলে ৭ টিচার এবং তিনটি ছক্কা সাহায্যে ৬৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন অনিসুল ইসলাম ইমন।





এছাড়াও গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের বিপক্ষে বল হাতে ২২ রানে ১ উইকেট নেয়ার পর, ব্যাট হাতে খেলেছিলেন ৪৪ বলে ৫৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে ২৩ বলে ৩৫ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন ইমন। খোদ বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপনও জানতে চেয়েছিলেন আনিসুল ইমনের ব্যাপারে।