ক্যাচ মিস এবং ভুল সিদ্ধান্তের প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হতে ম্যাচ হারতে বসেছে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য শেষ সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ১২৯ রান

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে শেষ দিনে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ব্যাটসম্যান মায়ারস ও বোনার। গতকাল অধিনায়ক মুমিনুল হকের সেঞ্চুরি ও অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে জয়ের সুবাতাস গায়ে মেখেই চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ।

কিন্তু আজ সকালে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম টেস্টের পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনে কোন উইকেটের দেখা পায়নি বাংলাদেশের বোলাররা। ফলে নতুন মোড়ে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম টেস্ট। আগেরদিন বিকেলে শেষ ঘণ্টায় দলের ইনিংসে কোনো বিপদ ঘটতে দেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান কাইল মায়ারস ও এনক্রুমাহ।

তাদের অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৫.৪ ওভারে ক্যারিবীয়রা পেয়েছিল ৫১ রান। আজ দিনের প্রথম সেশনেও অবিচল এ দুজন। স্বাগতিকদের একাধিক ভুলের পাশাপাশি ভাগ্যের সহায়তায় এখন ড্র’র পথে এগোচ্ছে চট্টগ্রাম টেস্ট।

এমন নয় যে, পুরো সেশনে টাইগার বোলারদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বরং উল্টোটা বলা যায় জোর দিয়ে। পুরো সেশনে একাধিক সুযোগ তৈরি করেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। কিন্তু কখনও রিভিউ না নেয়ার ভুল, আবার কখনও ক্যাচ ছেড়ে ক্যারিবীয়দের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। যার সুবাদে এখন সুবিধাজনক অবস্থানে সফরকারীরা।

চতুর্থদিন করা ৩ উইকেটে ১১০ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজ দুই প্রান্ত থেকে মেহেদি মিরাজ ও তাইজুলকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। প্রথম সেশনে মেলেনি সাফল্য, সুযোগ পেয়ে মায়ারস ও বোনার অবিচ্ছিন্ন জুটিতে যোগ করেছেন ১৩৮ রান।





মেহেদি মিরাজের বলে স্লিপে দাঁড়িয়ে হাফসেঞ্চুরিয়ান মায়ারসের ক্যাচ ছেড়ে দিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সে বলে পাওয়া সিঙ্গেল থেকে ফিফটি পূরণ হয় মায়ারসের। এছাড়া ইনিংসের ৫০তম ওভারে তাইজুলের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদেও পড়েছিলেন মায়ারস। আম্পায়ার আউট দেননি, রিভিউও নেয়নি বাংলাদেশ। কিন্তু সেই বলটি আঘাত হানত লেগস্ট্যাম্পে। ফলে সুযোগ পান মায়ারস।

সেশন শেষ হওয়ার ওভারে রিভিউ না নেয়ার ভুল করেনি বাংলাদেশ। এবারও বোলার ছিলেন তাইজুল, ব্যাটসম্যান মায়ারস এবং আম্পায়ারের সিদ্ধান্তও ছিল নটআউট। টাইগাররা রিভিউ নিলে দেখা যায়, সেই বলের উইকেটস ছিল আম্পায়ারস। অর্থাৎ আম্পায়ার আউট দিলে সাজঘরে ফিরতে হতো মায়ারসকে।

শুধু মায়ারস একা নন। বাংলাদেশের রিভিউ ভুলে বেঁচেছেন বোনারও। ইনিংসের ৫৬তম ওভারে নাঈম হাসানের দুর্দান্ত টার্নিং ডেলিভারি গিয়ে আঘাত হানে বোনারের পায়ে। বল লেগস্ট্যাম্প দিয়ে বের হয়ে যাবে ভেবে আউট দেননি আম্পায়ার, বাংলাদেশও নেয়নি রিভিউ। রিপ্লেতে দেখা যায়, সে বলটিও লেগস্ট্যাম্পে লাগত। ফলে মায়ারসের মতো বেঁচে যান বোনারও।





বাংলাদেশের একাধিক ভুলে শেষ পর্যন্ত অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মায়ারস। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩ উইকেট হারিয়ে ২৬৬ রান সংগ্রহ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বোনার ৭৯ এবং মায়ারস ১১৮ রানে অপরাজিত রয়েছেন। জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ১২৯ রান।