অবশেষে জয়ে ফিরেছে বাংলাদেশ। শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৩ রানে জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। শুরুতেই টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে এসেছে ৪৮.১ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে ২২৪ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা।
টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই লিটন দাসের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ০ রান করেই প্যাভেলিয়নে ফিরেছেন লিটন দাস। দুশমন্থ চামিরার বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন লিটন।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম ইকবালের সাথে জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান। নিজের পুরনো জায়গায় ফিরে পেয়ে ব্যাট হাতে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি সাকিব। দলীয় ৪৩ রানের মাথায় ৩৪ বলে ১৫ রান করে দানুশকা গুনাথিলাকার বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন সাকিব আল হাসান।
তবে এরপর মুশফিকুর রহিমকে সাথে নিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানো অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ৬৬ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৫১ তম হাফ সেঞ্চুরি। তবে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর বেশি সময় টিকতে পারেননি তামিম ইকবাল।
দলীয় ৯৯ রানের মাথায় জোড়া উইকেট তুলে নেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। প্রথমে ৫২ রান করা তামিম ইকবালকে এবং এরপরই শূন্য রানে মোহাম্মদ মিঠুনকে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। তবে এর পরেই মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
এই দুইজনের ১০৯ রানের পার্টনারশিপ ভাঙ্গেন লাকশান সান্দাকান। ৮৭ বলে চারটি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ৮৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মুশফিকুর রহিম। এইদিন বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
দলীয় ২৩০ রানের মাথায় ৭৬ বলে দুটি চার এবং একটি ছক্কা সাহায্যে ৫৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ব্যাট হাতে শেষের দিকে কার্যকরী ইনিংস খেলেছেন আফিফ হোসেন। আফিফ হোসেন ২৭ এবং মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত রান তোলা শুরু করে শ্রীলঙ্কা। তবে ওপেনিং জুটিকে বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়িত্ব হতে দেননি টাইগার স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। নিজের করা তৃতীয় ওভারে নিজের করা বলে ক্যাচ তুলে নেন তিনি। আউট হওয়ার পূর্বে ১৯ বলে ২১ রান তুলেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট করতে নামা পাথুম নিশানকাকে মাত্র ৮ রানে ফেরান কাটার মাস্টার।
তৃতীয় উইকেটে সফরকারীদের অধিনায়ক এবং সহ-অধিনায়ক মিলে ক্রিজে খুঁটি গাড়েন। শেষ পর্যন্ত ব্যক্তি ২৪ রানে সাকিব আল হাসানের বলে মেহেদী মিরাজের হাতে ক্যাচ তুলে দেন কুশল মেন্ডিস। এরপর ৩০ রান করে মিরাজের বলে আউট হয়েছেন অধিনায়ক কুশল পেরেরা।
মাত্র ৯ রানে ডি সিলভাকে ফেরান মিরাজ। দল যখন জয়ের সুবাস পাচ্ছে তখন ব্যাটিং তান্ডব শুরু করেন হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। দলিয় ১৪৯ রানের মাথায় ১৪ রান করা দাসুন শানাকাকে প্যাভিলিয়নে ফেরান মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
দলীয় ১০২ রানের মাথায় আবারো উইকেট তুলে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আসেন বান্দারাকে ৩ রানে ক্লিন বোল্ড আউট করেন মিরাজ। তবে এরপর এই ব্যাটিং তাণ্ডব শুরু করেন হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। একপ্রকার ম্যাচ হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ থেকে।
বিধ্বংসী হাসারাঙ্গা ডি সিলভার উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। তবে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ৬০ বলে তিন টিচার এবং পাঁচটি ছক্কার সাহায্যে ৭৪ রান করেন তিনি। এর পরের বলেই উদানাকে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মোস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশের হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ ৩০ রানে নেন চারটি উইকেট। মোস্তাফিজ নেন তিনটি এবং মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন দুটি উইকেট। একটি উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান।
বাংলাদেশ একাদশ : তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ মিঠুন, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ এবং মুস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কা একাদশ : পাথুম নিশাঙ্কা, দানুশকা গুনাথিলাকা, কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, আসেন বান্দারা, দাসুন শানাকা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, ইসুরু উদানা, লাকশান সান্দাকান এবং দুশমন্থ চামিরা।