চট্টগ্রামে আগামীকাল দ্বিতীয় দিনে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ এইচপি ক্রিকেট দল। তবে আজ তৃতীয় দিনে সকালে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় আয়ারল্যান্ড এ ক্রিকেট দল। প্রথম স্টেশনে কোন উইকেট না হারিয়ে লাঞ্চ ব্রেকে যায় আয়ারল্যান্ড। হ্যারি হেক্টর এবং কার্টিস ক্যাম্পেইর উভয়ই ২ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন।
দিনের শুরুতেই দুর্দান্ত খেলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক হ্যারি হেক্টর। তবে লাঞ্চ ব্রেক থেকে ফিরেই টপাটপ উইকেট তুলে নিয়েছেন তানভির ইসলাম। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন তিনি। দলীয় ৯৩ রানের মাথায় সাইফ হাসান ব্রেক থ্রু এনে দিলে বোলিং ভেলকি দেখান তানভির ইসলাম।
এরপর ৫৫ রান করা হ্যারি হেক্টরকে প্যাভিলিয়নের ফেরানোর পর টপাটপ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে আয়ারল্যান্ড অলআউট হয় ১৩৯ রানের। বাংলাদেশ এইচপি ক্রিকেট দল ম্যাচে জয়লাভ করে ইনিংস এবং ২৩ রানের ব্যবধানে। ৫১ রানের বিনিময়ে ৮ উইকেট লাভ করেন তানভির ইসলাম।
এই ম্যাচের আগে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে ১১টি ম্যাচ খেলেছেন তানভীর। যেখানে তার শিকার ছিল ১৯ উইকেট, একবারও নিতে পারেননি ইনিংসে পাঁচ উইকেট। সেই তিনি এবার এক ম্যাচেই নিলেন ১৩ উইকেট। প্রথম ইনিংসে পাঁচের পর, দ্বিতীয় ইনিংসে তার শিকার ৮টি।
এর আগে গতকাল ইয়াসির রাব্বির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩১৩ তুললে ১৬২ রানের লিড নেয় স্বাগতিকরা। অন্যদিকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে সফররত আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দল ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ৩৫ রান তুললে দিনশেষ হয়।
শুক্রবারে ১ উইকেট হারিয়ে ৮১ রানে প্রথমদিন শেষ করে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয়দিনের খেলায় শনিবারে ব্যাট করতে আসেন আগেরদিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান এবং মাহমুদুল হাসান জয়।
ব্যাট হাতে এ দুজন ব্যাটসম্যান শুরুটা ভালোই করেন। গড়েন ৮৩ রানের জুটি। গ্রাহাম হোমেরের বলে ব্যক্তিগত ৪৯ রানে লরকান টকারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ওপেনার সাইফ। আর ৩৯ বলে ৪১ রান করা মাহমুদুল জয়কে আউট করেন আইরিশ অধিনায়ক হেক্টর।
চতুর্থ উইকেট পার্টনারশিপে ইয়াসির রাব্বি এবং তৌহিদ হৃদয় মিলে দলীয় স্কোরটা বড় করতে থাকেন। দুজনে ১১২ রানের জুটি গড়েন। ৭৪ বলে ৩৬ রান করে গার্থের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তৌহিদ হৃদয়। আর ইয়াসির রাব্বি নিজের হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে গিয়ে থেমে যান। তার ৯২ রানের ইনিংসটি ৫টি ছয় এবং ৮টি চারে সাজানো। পরের দুই উইকেটে সাহাদাৎ হোসেন ২০ রানে এবং ১৯ রানে আউট হন আকবর আলি।
বাংলাদেশের শেষ চারজন ব্যাটসম্যান মিলে দলীয় স্কোরে যোগ করতে পেরেছেন মাত্র ১৬ রান। ৭ বলে কোনো রান করতে পারেননি রিশাদ হোসেন। এছাড়া ৮ রানে তানভীর হাসান এবং ৪ রানে আউট হন এবাদত হোসেন। আর ০ রানে অপরাজিত থাকেন খালেদ আহমেদ। আয়ারল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন মার্ক আদায়ের এবং গ্রাহাম হোমে।
তৃতীয় সেশনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তানভীর হাসানের ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে পড়ে আইরিশ ব্যাটিং লাইনআপ। তবে শুরুটা করে পেসার এবাদত হোসেন। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের খেলায় জেমস ম্যাককোলামকে আউট সাজঘরে পাঠান তিনি। এই আইরিশ ওপেনার ওপেনার করেন মাত্র ১ রান।
পরের তিনটি উইকেটই নিয়েছেন তানভীর। সফরকারী দলের অন্য ওপেনার জেরেমি ললোর ৫০ বল খেলে করেছেন ৮ রান। ৪০ বলে ২০ রান করেন ফেরেন স্টিফেন ডোহেনি। আর জোনাথন গার্থ কোনো রান না করেই ইয়াসির রাব্বির হাতে ক্যাচ তুলে দেন। দিনশেষে অধিনায়ক হ্যারি হেক্টর এবং কার্টিস ক্যাম্পেইর উভয়ই ২ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন।