বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে টান টান উত্তেজনায় শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচে জেতালেন শামসুর রহমান। আগে ব্যাট করে চট্টগ্রামকে ১৫৯ রানের টার্গেট দেয় খুলনা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রান সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম।
টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে জেমকন খুলনা। দলের হয়ে ইনিংস সূচনা করেন জহুরুল ইসলাম ও জাকির হাসান। উদ্বোধনী জুটিতে ৩৩ রান তোলেন জাকির হাসান ও জুহুরুল। চট্টগ্রামের বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলামের শর্ট বলে উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ মিঠুনেরত হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিলে এ জুটি ভাঙ্গে। ১৫ বলে ১৫ রান করেন তিনি।
নিজের পরের ওভারে এসে জহুরুল ইসলামের উইকেট তুলে নেন শরীফুল। শরীফুলের বাউন্সারে জহুরুল হুক করতে গিয়ে ক্যাচ দেন বদলি ফিল্ডার সৈকত আলীর হাতে। চার নম্বরেই মাঠে নামেন এ টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা মাশরাফি বিন মর্তুজা। সঙ্গে ছিলেন সাকিব আল হাসান।
কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত মাত্র ১ রান করেই সাজঘরে ফেরেন মাশরাফি। স্পিনার রাকিবুল হাসানের বলে সাকিব ড্রাইভ করলে তা রাকিবুলের হাতে লেগে নন স্ট্রাইকিংয়ের স্টাম্পে আঘাত করে। তখন মাশরাফি নন স্ট্রাইকিং ক্রিজের বাইরে থাকায় তাকে ফিরতে হয়। দুই ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে জেমকন খুলনা।
এ ম্যাচেও জ্বলেনি সাকিবের ব্যাট। একটি ছক্কা মারলেও ১৫ রান করে ফিরেছেন সাজঘরে। দলীয় ৬৬ রানের মাথায় মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বলে মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব।
পঞ্চম উইকেটে ইমরুল কায়েসকে সাথে নিয়ে হাল ধরেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দুজন মিলে গড়েন ৪৩ রানের জুটি। বেশ দ্রুত গতিতে রান তুলছিলেন রিয়াদ। চাপ সামলে জেমকন খুলনা যখন বড় স্কোরের অপেক্ষায় তখন সব এলোমেলো করে দেন মুস্তাফিজ-শরীফুল।
মুস্তাফিজের বলে পুল করতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন কায়েস। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ লুফে নেন মুস্তাফিজ। পরের ওভারেই দারুণ এক ডেলিভারিতে মাহমুদুল্লাকে বোল্ড করে দেন শরীফুল। কায়েস ২৩ বলে ২৪ রান ও রিয়াদ ১৭ বলে ২৬ রান করেন।
পরের ওভারে ফেরত এসে শামীম হোসেনের উইকেট নেন মুস্তাফিজ। ১০৯ রানে ৪ উইকেট থেকে ১০ রান নিতে গিয়ে ৩ উইকেট হারায় জেমকন খুলনা। বড় ইনিংস খেলতে পারেননি আরিফুল হকও। জিয়াউর রহমানের বলে থার্ড ম্যানের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেন ৬ রান।
শেষদিকে ১৪ বলে ৩২ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন শুভাগত হোম। শেষ ওভারের প্রথম বলে শুভাগত হোমকে স্ট্রাইক দিতে গিয়ে রান আউট হন হাসান মাহমুদ। তবে হোমের কল্যাণে শেষ ওভারে রান হয় ১৪।
১৫৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করেও ইনিংস বড় করতে পারেনি চট্টগ্রামের কনো ব্যাটসম্যান। এই দিন শুরুতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন তাদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান লিটন দাস। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ৪ রান করা লিটন দাসের উইকেট তুলে নেন সাকিব আল হাসান।
এরপর দলীয় ৩৮ রানের মাথায় মাহমুদুল হাসান জয়ের উইকেট তুলে নেন শুভগত হোম। ১৪ বলে ২৪ রান করে আউট হন তিনি। দলীয় ৭১ রানের মাথায় ১৯ রান করা সৌম্য সরকারের উইকেট তুলে নেন সাকিব আল হাসান। তবে এরপরও শুরুটা ভালো করে ইনিংসে বড় করতে পারেনি অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুন এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
২১ বলে ২৩ রান করা মোহাম্মদ মিঠুনের উইকেট তুলে নেন হাসান মাহমুদ। এরপর দলীয় ১০৫ রানের মাথায় অফ কাটারে মোসাদ্দেক হোসেনকে বোল্ড আউট করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। দলিয় ১২০ রানের মাথায় ৬ রান করা জিয়াউর রহমানের উইকেট তুলে নেন আল-আমিন হোসেন।
তবে এক প্রান্ত থেকে ম্যাচ আগলে রাখেন শামসুর রহমান। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন নাহিদুল ইসলাম। ১৯ তম ওভারে শুভাগত হোমকে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন নাহিদুল ইসলাম। তবে ওই ওভারের শেষ বলে নাহিদুল এর টিকেট তুলে নেন তিনি। ১০ বলে দুই চককার সাহায্যে ১৮ রান করে আউট হন নাহিদুল ইসলাম। শেষ ওভারে জয়ের জন্য চট্টগ্রামের প্রয়োজন ছিল ৯ রানের। প্রথম বল ডট দিলেও দ্বিতীয় বলে আল-আমিন হোসেনের বলে ৪ হাঁকিয়ে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। পরের ৩ বলে সিঙ্গেল নিলে শেষ বলে জয়ের জন্য দুই রান প্রয়োজন হয় চট্টগ্রামের। শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ নিশ্চিত করেন শামসুর রহমান।