নজিরবিহীন ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ২ সুপার ওভারে ক্রিস গেইলের ব্যাটে নাটকীয় ভাবে ম্যাচ জিতল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।

ক্রিকেট ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে গতকাল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এবং কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব এর মধ্যকার ম্যাচে। গতকাল আইপিএলে ডাবল সুপার ওভার দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের পর দুই সুপার ওভারের দ্বিতীয়টি জিতে শেষ হাসি হেসেছে লোকেশ রাহুলের কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।

ছবি : বিসিসিআই

নাটকীয় এই ম্যাচে প্রথমে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ১৭৬ রান সংগ্রহ করে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। কুইন্টন ডি কক ৪৩ বলে ৫৩, হার্দিক পান্ডিয়া ৩০ বলে করেন ৩৪ রান। পোলার্ড মাত্র ১২ বলে ১ চার আর ৪ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৩৪ রানে। ১২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে তার সঙ্গে ২৪ রানে ছিলেন কল্টার নাইল।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। এই দিনে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত খেলেছে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব এর অধিনায়ক কে এল রাহুল। ৫১ বলে ৭ চার আর ৩ ছক্কায় ৭৭ রান করে রাহুল।

এছাড়া ক্রিস গেইল ২১ বলে ১ চার আর ২ ছক্কায় ২৪ এবং নিকোলাস পুরান ১২ বলে ২টি করে চার ছক্কায় ২৪ রান করেন। তবে রাহুল আউট হওয়ার আগে জয়ের পথে ছিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।

১৫ বলে জয়ের জন্য পাঞ্জাবের দরকার ছিল ২৪ রান, হাতে ৫ উইকেট। শেষ ওভারে ৯ করতে হতো পাঞ্জাবকে। উইকেটে ছিলেন দীপক হুদা (১৩ বলে ২১) আর ক্রিস জর্ডান (৫ বলে ৭)। জয়টা তখনও নাগালে মনে হচ্ছিল।

কিন্তু ট্রেন্ট বোল্টের করা শেষ ওভারে প্রথম বলে হুদা নেন সিঙ্গেলস। দ্বিতীয় বলে জর্ডান বাউন্ডারি হাঁকালেও পরের তিন বলে মাত্র ২ রান নিতে পারেন এই যুগল। শেষ বলে দরকার ছিল ২, তাড়াহুড়ো করে এক রান নিতে পারলেও দ্বিতীয় রানের সময় রানআউট হয়ে যান জর্ডান। ফলে টাই হয় ম্যাচ, গড়ায় সুপার ওভারে।

প্রথম সুপার ওভারে আগে ব্যাটিং করে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। অন্য প্রান্তে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে বোলিংয়ে আসেন বর্তমান সময়ের সেরা ফাস্ট বোলার জাসপ্রিত বুমরাহ। অধিনায়ক লোকেশ রাহুল এবং নিকোলাস পুরান নামে ওপেনিংয়ে। কিন্তু ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হয়ে যান পুরান। শেষ পর্যন্ত ওই ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৫ রান করতে পারে পাঞ্জাব।

মাত্র ৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সেটিও করতে পারেনি বর্তমান সময়ে দুই সেরা ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা এবং কুইন্টন ডি কক। কিন্তু তারা দুজন শামির ওই ওভারে ৫ রানের বেশি তুলতে পারেননি, শেষ বলে আউট হন ডি কক। ফলে সুপার ওভারও টাই হয়।

নজিরবিহীন ইতিহাস গড়ে দ্বিতীয় সুপার ওভারে গড়ায় ম্যাচ। এবার মুম্বাইয়ের আগে ব্যাটিং, নামেন কাইরন পোলার্ড আর হার্দিক পান্ডিয়া। ক্রিস জর্ডানের করা ওই ওভারে পোলার্ড একটি বাউন্ডারিসহ ৭ রান নিলে ১১ রান তুলতে পারে মুম্বাই। ওভারের চতুর্থ বলে রানআউট হয়েছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া, কিন্তু সূর্যকুমার যাদব স্ট্রাইকই পাননি।

দ্বিতীয় সুপার ওভারে ১২ রান দরকার হয় পাঞ্জাবের। এবার আর ভুল করেনি লোকেশ রাহুলের দল। ক্যারিবীয় হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইলকে ওপেনিংয়ে পাঠায় তারা, সঙ্গে ছিলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল।

ট্রেন্ট বোল্টের করা ওভারে প্রথম বলটিই ছিল ফুলটস। গেইল লং অনের ওপর দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকান। পরের বলে নেন এক রান। তৃতীয় বলে স্ট্রাইক পান আগারওয়াল। আর সেখানে দাঁড়িয়ে টানা দুই বাউন্ডারিতে ম্যাচের সব উত্তেজনা পানি করে দেন ভারতীয় এই ব্যাটসম্যান।

নজিরবিহীন এক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে শেষ হাসি হাসে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। এতে ৯ ম্যাচে তৃতীয় জয় নিয়ে পয়েন্ট তালিকার ছয় নম্বরে উঠে এসেছে রাহুলের দল। সমান ম্যাচে ৬ জয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স আগের মতোই আছে দুইয়ে।