ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ আইপিএল এর এবারের আসরে দারুন ছন্দে রয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস। আজ (সোমবার) রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ৫৯ রানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল দিল্লি ক্যাপিটালস। ইতিমধ্যেই পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারটি ম্যাচে জয়লাভ করেছে দিল্লি।
আজ রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ১৯৬ রানের সংগ্রহ পায় দিল্লি ক্যাপিটালস। জবাবে জবাবে কাগিসো রাবাদা বিধ্বংসী বোলিং ষয়ে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৯ রান সংগ্রহ করে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।
এদিন রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে দিল্লি ক্যাপিটালস। উদ্বোধনী জুটিতেই পৃথ্বি শ আর শিখর ধাওয়ান ৪০ বলে যোগ করেন ৬৮ রান। বেশি ভয়ংকর ছিলেন পৃথ্বি। দারুণ সব শটে মাঠ মাতিয়ে রেখেছিলেন।
এই দুইজনের পার্টনারশিপ ভাঙেন মোহাম্মদ সিরাজ। তার দারুণ এক ডেলিভারি বুঝতে না পেরে উইকেটরক্ষক এবি ডি ভিলিয়ার্সকে ক্যাচ দেন পৃথ্বি। ২৩ বলে ৫ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় পৃথ্বি করেন ৪২ রান।
তবে এরপরে ছন্দ হারিয়ে ফেলে দিল্লি ক্যাপিটালস। ৮ থেকে ১২-এই পাঁচ ওভার কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি দিল্লি ক্যাপিটালস ব্যাটসম্যানরা। ৩০ বলের মধ্যে মাত্র ২০ রান তুলে তারা হারায় ধাওয়ান আর আয়ারকে।
ইনিংসের দশম ওভারে ইসরু উদানাকে বড় শট খেলতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন ২৮ বলে ৩২ করা ধাওয়ান। এক ওভার পর মঈন আলিকে খেলতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন আয়ার (১৩ বলে ১১)।
তবে আজ দিনটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিসের। ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড় তোলেন তিনি। তার সাথে যোগ দেন রিশাব পান্ত। মোহাম্মদ সিরাজের বল গায়ে লেগে পান্ত বোল্ড হন ২৫ বলে ৩৭ করে, যে ইনিংসে ৩টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কাও হাঁকান দিল্লির বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
তবে স্টয়নিস ২৪ বলে নিজের ফিফটি তুলে নেন ওই ওভারেই। শেষ ওভারে এক ছক্কায় ৭ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন সিমরন হেটমায়ার। স্টয়নিস ২৬ বলে ৬ চার আর ২ ছক্কায় ৫৩ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে পড়ে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। দুই স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও অক্ষর প্যাটেলের বলে হাতই খুলতে পারলেন না দেবদূত পাড়িক্কাল ও অ্যারন ফিঞ্চ। ছয় বলে ৪ করে অশ্বিনের শিকার পাড়িক্কাল, ১৪ বলে ১৩ করা ফিঞ্চকে ফিরিয়েছেন প্যাটেল। মিডল অর্ডারে চেষ্টা করেছিলেন আগের ম্যাচে ফর্মে ফেরা কোহলি।
কিন্তু রাবাদার প্রথম শিকার হওয়ার আগে ৩৯ বলে ৪৩ রানের বেশি করতে পারেননি ভারত ও ব্যাঙ্গালোরের অধিনায়ক। এ অবস্থায় এবি ডি ভিলিয়ার্স ও মঈন আলীর ওপর বর্তায় বড় দায়িত্ব। তারাও ফিরে গেছেন অল্প রানে। ডি ভিলিয়ার্স (৯ রান) স্বদেশি পেসার নর্কিয়ার প্রথম শিকার। আলীকে(১১) হেটমায়ারের হাতে ক্যাচ বানিয়েছেন প্যাটেল।
ব্যাঙ্গালোরের ব্যাটিং গভীরতার শেষ আদতে এখানেই। পরে দ্বিতীয় স্পেলে এসে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন রাবাদা ও নর্কিয়া। রাবাদা তো হ্যাটট্রিকেরই সামনে দাঁড়িয়েছিলেন দুই ওভার মিলিয়ে। ষোলতম ওভারের শেষ বলে ওয়াশিংটন সুন্দর ক্যাচ দেন অশ্বিনকে, ১৮তম ওভারের প্রথম বলে দুবে বোল্ড। দ্বিতীয় বলে ইসুরু উদানা রাবাদাকে হ্যাটট্রিক থেকে বঞ্চিত করে পরের বলেই ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন।
১৭.৩ ওভারে ৮ উইকেটে ১১৯ হয়ে পড়া ব্যাঙ্গালোরের বেশি দূর যাওয়ার সাধ্য ছিল না। তারা ১৩৭ রানে থেমে যায় ৯ উইকেটে। সিরাজের স্টাম্প উপড়ে দিয়ে নবম উইকেটটি নিয়েছেন নর্কিয়া। চার ওভারে ২৪ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট রাবাদার, ৪ ওভারে ২২ রান ব্যয়ে ২ উইকেট নর্কিয়ার, অক্ষর প্যাটেল ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ফিরিয়েছেন আলী ও ফিঞ্চকে